-->

কিভাবে ঘরে বসে ৮ টি উপায়ে সহজে ইনকাম করা যায়

হ্যালো বন্ধুরা আজ আমরা জানব ৮ টি উপায়ে ঘরে বসে অনলাইনে কিভাবে আয় যায়। 

 


বর্তমানে আধুনিক যুগে অনলাইনে ইনকাম করার পদ্ধতি অনেক জনপ্রিয়। যুগের সাথে তাল মিলিয়ে প্রযুক্তির অনেক উন্নয়ন সাধন হচ্ছে। প্রযুক্তির এই উন্নয়নের মাধ্যমে বিভিন্ন উপায়ে ঘরে বসে আয় করার পদ্ধতি চালু হচ্ছে। অনলাইন থেকে ইনকাম করার হরেক রকমের উপায় রয়েছে। আজ আমরা এই অনলাইন থেকে কিভাবে আয় করা যায় সে সম্পর্কে বিস্তারিত জানব। ঘরে বসে আয় করার নিশ্চিত উপায়, মার্কেটপ্লেসে ফ্রিল্যান্সিং করে আয়, ব্লগিং করে আয়, ঘরে বসে গুগল অ্যাডসেন্স থেকে আয় , ঘরে বসে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করে আয়,

প্রথমেই বলে রাখি অনলাইন থেকে ইনকাম করতে চাইলে আপনাকে অবশ্যই কোন না কোন একটি বিষয় সম্পর্কে অভিজ্ঞতা অর্জন করতে হবে। আজ আমরা কয়েকটি অনলাইনে ইনকাম করার পদ্ধতি আপনাদের সাথে শেয়ার করব । 
এই পদ্ধতি গুলোর মাধ্যমে আপনারাও ঘরে বসে ইনকাম করতে পারবেন। যদি আপনাদের দক্ষতা এবং ধৈর্য থেকে থাকে।

১) ব্লগ ওয়েব সাইট: প্রথমেই আমরা যে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করতে যাচ্ছি সেটি হচ্ছে যে একটি ওয়েব সাইট খুলে, সেখানে বিভিন্ন ধরনের তথ্য সম্বলিত আর্টিকেল লেখালেখি করে আয় করতে পারবেন। আর এই আর্টিকেল লেখার জন্য আপনার অনেক বেশি অভিজ্ঞতার প্রয়োজন নাও হতে পারে। আপনি চাইলে একটি নির্দিষ্ট ক্যাটাগরির ওয়েবসাইট খুলে সেখানে নির্দিষ্ট ক্যাটাগরির আর্টিকেল পাবলিশ করতে পারেন। অথবা আপনি নিউজ পোর্টালের মত একাধিক ক্যাটাগরি সম্বলিত ওয়েবসাইট ক্রিয়েট করে সেখানে আপনি আপনার পছন্দমত বিভিন্ন ধরনের আর্টিকেল লেখালেখি করে একটি ওয়েবসাইট সাজাতে পারেন। পরবর্তীতে আপনার ওয়েবসাইটে যখন ভিজিটর বৃদ্ধি পাবে তখন , আপনার ওয়েবসাইটের জন্য গুগল এডসেন্স ওপেন করবেন, এবং আপনার ওয়েব সাইটের সাথে এডসেন্স সংযুক্ত করে আপনার ওয়েবসাইটে গুগল এডসেন্সের বিজ্ঞাপন বসিয়ে সেখান থেকে আয় করতে পারেন।

একটি ওয়েব সাইট থেকে কত ভাবে আয় করা যায়: একটি পূর্ণাঙ্গ ওয়েবসাইট থেকে একাধিক উপায়ে ইনকাম করা সম্ভব। (১) প্রথমত আপনি আপনার ওয়েবসাইটে google এডসেন্স এর মাধ্যমে ডলার ইনকাম করতে পারবেন। (২) এছাড়াও আপনি চাইলে আপনার ওয়েবসাইটে অন্য কোম্পানির স্পন্সারশিপ নিয়ে ইনকাম করতে পারেন। (৩) আপনার যদি নিজস্ব কোন ব্যবসা থাকে তাহলে সেই ক্ষেত্রেও আপনার ব্যবসায়ের সার্ভিস গুলো আপনার এই ওয়েবসাইটে প্রমোট করে ইনকাম করতে পারবেন। (৪) অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং এর লিংক আপনার এই ওয়েব সাইটে যুক্ত একটি স্মার্ট উপার্জন করতে পারেন । 


২) ইউটিউবিং: বর্তমানে ইউটিউব একটি জনপ্রিয় ভিডিও শেয়ারিং মাধ্যম। আর এই ভিডিও শেয়ারিং ওয়েবসাইটে আপনি আপনার তৈরি করা নিজস্ব ভিডিও পাবলিস্ট করে ইউটিউব থেকেও ইনকাম করতে পারেন। আর ইউটিউব থেকে ইনকাম করার জন্য আপনার প্রয়োজন হবে নিজস্ব একটি ইউটিউব চ্যানেল। ইউটিউব চ্যানেল থেকে ইনকাম করার ক্ষেত্রে ইউটিউব কয়েকটি শর্ত জুড়ে দিয়েছে, (১) ১ হাজার সাবস্ক্রাইব এবং ৪০০০ ঘন্টা ওয়াচ টাইম অর্জন করার পরবর্তী তে আপনি আপনার ইউটিউব চ্যানেলের জন্য গুগল এডসেন্সে আবেদন করতে পারেন। এবং google যদি আপনার আবেদনটি গ্রহণ করে সেক্ষেত্রে আপনার youtube থেকে ইনকাম শুরু হয়ে যাবে। 

ইউটিউবে কি ধরনের চ্যানেল খুলব: ইউটিউবে বিভিন্ন ধরনের চ্যানেল নিয়ে কাজ করা যায়। আপনার উচিত এমন ধরনের ভিডিও নিয়ে কাজ করা, যাতে করে দুই থেকে তিনটি ভিডিও তৈরি করার পরবর্তীতে আপনার যেন আর নতুন কোন ভিডিও তৈরি করার বিষয়ের এর অভাব না হয়।
অনেকেই রয়েছে যারা ইউটিউব থেকে ইনকাম করার আশায় ইউটিউব চ্যানেল খুলেন এবং পরবর্তীতে দুইটা কিংবা তিনটা ভিডিও দেওয়ার পরবর্তীতে তারা নতুন কোন ভিডিও দেওয়ার জন্য নতুন কোন ট্রফিক খুঁজে পায় না। সেই ক্ষেত্রে আপনার নিজের অনেক ভালো অভিজ্ঞতা রয়েছে কিংবা আপনার নিজস্ব কোন ক্রিয়েটিভিটি রয়েছে যেটি আসলে মানুষের প্রয়োজন অথবা যে ক্রিয়েটিভিটি মানুষ দেখতে স্বাচ্ছন্দ বোধ করবে এই ধরনের ভিডিও তৈরি করা উচিত। সেক্ষেত্রে আপনার ইউটিউব চ্যানেলটি খুব তাড়াতাড়ি জনপ্রিয় হয়ে যাবে। (১) আপনি ব্লগ ইউটিউব চ্যানেল খুলতে পারেন অর্থাৎ আপনি কোথাও ঘুরতে গেছেন সেখানে আপনি আপনার ফোনের ক্যামেরা দিয়েই ভিডিও শুট করে সেগুলো পরবর্তীতে একটু ফিনিশিং এডিট করে, সেটি আপনার ইউটিউব চ্যানেলে পাবলিশ করতে পারেন। (২) আপনি যদি ইংরেজি, বাংলা, গণিত, হিসাববিজ্ঞান, অথবা অন্য যেকোন সাবজেক্ট খুব ভালো পারদর্শী হয়ে থাকেন, এবং আপনি যদি মনে করেন আপনি এই বিষয়গুলো ছাত্র-ছাত্রীদের অনেক ভালো বোঝাতে পারবেন সে ক্ষেত্রে আপনি এই ধরনের একাডেমিক সাবজেক্টগুলো নিয়েও ভিডিও ক্রিয়েট করতে পারেন। (৩) আপনার ঘরে যদি বাচ্চা থেকে থাকে তবে আপনার বাচ্চাদের খেলাধুলার ভিডিও শুট করে সেগুলো আপনারা পাবলিস্ট করতে পারেন। (৪) ছোট ছোট খেলনা গাড়ি দিয়ে ভিডিও তৈরি করতে পারেন। (৫) মাছ ধরা, মাছ কাঁটা, যেকোন ক্রিয়েটিভ কাজ এগুলোর ভিডিও আপলোড দিতে পারেন।

ইউটিউব থেকে কত ভাবে আয় করা যায়: ইউটিউব থকেও ওয়েব সাইটের মতো অনেক উপায় আয় করা সম্ভব।

৩) অনলাইনে টিউশনি: বর্তমান এই ব্যস্ততার সময়ে অনেকেই চায় অনলাইনে প্রাইভেট পড়তে। আপনার যদি কোন এক বা একাধিক Subject এ প্রাইভেট পড়ানোর দক্ষতা থাকে তবে আপনি অনলাইনের মাধ্যমে দেশের বিভিন্ন প্রান্তের ছাত্র-ছাত্রী পড়াতে পারেন। অনলাইনে পড়ানোর জন্যে আপনি ফেইসবুক প্রাইভেট গ্রুপ খুলে মোবাইলের ক্যামেরা ব্যবহার করে ফেসবুক লাইভে ক্লাস করাতে পারেন। অথবা কম্পিউটার থাকলে MS power point দিয়ে স্লাইড ভিডিও বানিয়ে , জুম, গুগোল মিটিং এর মতো সফটওয়্যার ব্যাবহার করে ক্লাস পরিচালনা করতে পারেন। 

৪) লেখালিখি করে আয়/ আর্টিকেল বিক্রি করে আয়: নিজের ওয়েব সাইট না থাকলে আপনি অন্যের ওয়েব সাইটের জন্যে আর্টিকেল লিখে দিয়েও আয় করতে পারেন। আপনার লেখা আর্টিকেল বিক্রি করে আয় করতে পারেন। ফেসবুকে অনেক গ্রুপ রয়েছে যেখানে আর্টিকেল ক্রয় বিক্রয় করা হয়। এছাড়াও ইন্টারন্যাশনল বিভিন্ন মার্কেট প্লেসে আর্টিকেল লিখার জন্যে উচ্চ মূল্যে সেলার দের হায়ার করা হয়। আপনি যদি ইংরেজি তে ভালো আর্টিকেল লিখতে পারেন তবে আপনি Fiverr, Upwork, Freelancer ইত্যাদি ইন্টারন্যাশনাল মার্কেট প্লেসে একাউন্ট খুলে সার্ভিস দিতে পারেন। 

কি ধরনের আর্টিকেল: বেশি চাহিদা পূর্ন আর্টিকেল লিখতে পারতে হবে। ভ্রমণ আর্টিকেল, সাস্থ্য টিপস, মেয়েদের বা ছেলেদের সৌন্দর্য রিলেটেড ব্লগ আর্টিকেল, প্রতিদিনের নিউজ ইত্যাদি।

৫) ইউনিক প্রডাক্ট বিক্রি: আপনার এলাকায় এমন কোন প্রডাক্ট আছে যেটা অন্য সব জায়গায় সহজে পাওয়া যায় না, কিন্তু এর চাহিদা প্রচুর। এই ধরনের প্রডাক্ট খুঁজে বের করতে হবে। যেমন খাটি খেজুরের গুর, খাটি মধু, মাটির বা কাঠের তৈরি করূকার্য,  মেয়েদের প্রসাধনী , গাছের চারা, ইত্যাদি এই সব পন্য গুলো ফেসবুক এর । মাধ্যমে মার্কেটিং করের, বিক্রয় করতে পারেন।

৬) এফিলিয়েট মার্কেটিং: এফিলিয়েট মার্কেটিং হচ্ছে অন্যের প্রডাক্ট এর গুন গান গেয়ে সেটা বিক্রয় করা। এতে আপনি বিক্রয় প্রতি কমিশন পাবেন। দেশের বিভিন্ন ওয়েব সাইট এখন এফিলিয়েট মার্কেটিং অফার করে। Daraz, bdshop, আজকের ড্রিল ইত্যাদি প্ল্যাটফর্ম গুলোতে এফিলিয়েট প্রোগ্রামে জয়েন হয়ে। আপনি তাদের পন্য গুলোর এফিলিয়েট লিংক নিয়ে প্রচার করতে পারেন। 

এছাড়াও ইন্টারন্যাশনল বিভিন্ন মার্কেট প্লেস ও এফিলিয়েট প্রোগ্রাম অফার করে। যেমনঃ  amazon, alibaba, fivarr, upwork, Guru, Canva, namecheep ইত্যাদি।

অনলাইনে দুই ধরনের প্রডাক্ট পাওয়া যায় একটা হচ্ছে ডিজিটাল প্রডাক্ট যেমন সফটওয়্যার, ওয়েবসাইট থিম, প্রডাক্ট Key, ইত্যাদি।  আরেক টা ফিজিক্যাল প্রডাক্ট যেমন জামাকাপড়, আসবাবপত্র ইত্যাদি। আপনি যেকোন প্রডাক্ট নিয়ে এফিলিয়েট মার্কেটিং শুরু করতে পারেন।

৭) নিজের কোন ব্যবসা: আপনার নিজের কোন ব্যবসা থাকলে সেটা অনলাইনের মাধ্যমে প্রচার করে অনেক বেশি পরিমাণে বিক্রয় করতে পারেন। ফেসবুক , ইউটিউব, টিক টক এই সোসিয়াল মিডিয়া গুলোতে বাংলাদেশী ব্যবহারকারী বেশি। তাই আপনি যদি নিজের ব্যবসার প্রচার করতে ইচ্ছুক হন তবে এগুলো ব্যবহার করতে পারেন।  ঘরে বসে হন ভার্চুয়াল অ্যাসিস্টেন্ট, ঘরে বসে ইউটিউব থেকে আয়,সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং করে ঘরে বসে আয়, কন্টেন্ট রাইটার/ আর্টিকেল লিখে আয় করুন
 
৮) ফ্রিল্যান্সিং করে ইনকাম: বর্তমান আধুনিক যুগে ফ্রিল্যান্সিং একটি অত্যন্ত জনপ্রিয় একটি পেশা। তবে আপনি যদি ফ্রিল্যান্সিং করে ইনকাম করতে চান তাহলে অবশ্যই আপনার একটি বা একাধিক দক্ষতা থাকতে হবে। অনলাইনের মাধ্যমে ফ্রিল্যান্সিং করতে হলে আপনাকে অনলাইন রিলেটেড কোন এক বা একাধিক কাজের অভিজ্ঞতা প্রয়োজন হবে। ডাটা এন্টি, ডিজিটাল মার্কেটিং, ফেসবুক মার্কেটিং, ইউটিউব মার্কেটিং, সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং এন্ড প্রমোশন, লিড জেনারেশন, ওয়েব ডিজাইন, ওয়েব ডেভেলপমেন্ট, অ্যাপ ডিজাইন, অ্যাপ ডেভেলপমেন্ট, ভিডিও এডিটিং, এসইও, একাউন্টিং এন্ড ম্যানেজমেন্ট ইত্যাদি। এই বিষয়গুলোর উপর যদি আপনার পরিপূর্ণ দক্ষতা থেকে থাকে তবে আপনি ফাইবার , আপওয়ার্ক, পিপুল পারআওয়ার, ফ্রিল্যান্সার, ইত্যাদি মার্কেট প্লেসে একাউন্ট খুলে আপনার সার্ভিস সেল দিয়ে ভালো পরিমাণে ইনকাম করতে পারেন।

এ সকল দক্ষতা অর্জন করার জন্য আপনি চাইলে পেইড কোন কোর্স করতে পারেন এছাড়াও ইউটিউবের ফ্রি ভিডিও দেখেও আপনি শিখতে পারবেন এবং অবশ্যই ফ্রিতে শিখেই ইনকাম করতে পারবেন যদি আপনার চেষ্টা এবং ধৈর্য থেকে থাকে।

তো বন্ধুরা আমরা এই পোস্টে অনেকগুলো আইডিয়া শেয়ার করলাম। যেখান থেকে আপনারা চাইলে যে কোন এক বা একাধিক অপশন গুলো বেছে নিয়ে আপনাদের জীবনকে সাজাতে পারেন। আজকের মত এ পর্যন্তই সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন আল্লাহ হাফেজ।